ঠাকুরগাঁওয়ে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। এতে রাসায়নিক সারের ব্যবহারের প্রবণতা যেমন কমছে, তেমনি ফসল উৎপাদনের খরচও সাশ্রয় হচ্ছে। এছাড়া জৈব সারের ব্যবহার ও উৎপাদন ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ এই জেলার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে।
জানা গেছে, গত বছর ঠাকুরগাঁও সদরের বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকার ১০-১৫ জন চাষি কেঁচো সংগ্রহ করে জৈব পদ্ধতিতে সার উৎপাদন শুরু করেন। আর তাদের বিনা মূল্যে সার তৈরির উপকরণ দিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সহযোগিতা করে। কৃষকদের উৎপাদিত সেই সার জমিতে ব্যবহার করে আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম, মাজেদুর রহমান, হামিদুর রহমান, রইস উদ্দীনসহ একাধিক কৃষক বলেন, সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো কম্পোট সার প্রয়োগে খরচ হয় মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহারে সেই ফলন পেতে চাষিদের তিন থেকে চার গুন বেশি টাকা গুনতে হয়। তাছাড়া এ সার তৈরিতে তেমন খরচ না হওয়ায় আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি।
বেগুনবাড়ি নতুনপাড়া এলাকার কৃষক মোমিনুল ইসলাম বলেন, ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারের ফলে ফলন বেড়েছে। তাছাড়া নিজেই উৎপাদন করি বলে খরচও কমে গেছে। উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতি কেজি কেঁচো ১০ টাকা দরে বিক্রি করে আমার বাড়তি আয় হচ্ছে।
বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, এই এলাকায় মাঠপর্যায়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য পরামর্শ ও আর্থিক সহায়তার মধ্য দিয়ে ১০টির বেশি কেঁচো সার উৎপানের প্রদর্শনী গড়ে উঠেছে। কৃষকরা উৎপাদিত কেঁচো সার নিজের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করে আয় করছে। অনেক বেকার যুবকও কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে উপার্জনে নেমে পড়েছেন। এজন্য সহজ শর্তে ঋণ সহায়তার দাবি তাদের।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রাম এনএটিপি-২’র আওতায় কৃষি বিভাগ কেঁচো সার উৎপাদনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করছেন। পরিবেশবান্ধব এই সার মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে কৃষক কম খরচে সার পাচ্ছেন।
সূত্র : ইউএনবি
Leave a Reply