নবী-রাসুলদের আহ্বান, আল্লাহর সুবিশাল সৃষ্টিজগৎ ও মানবপ্রকৃতির সাক্ষ্য অকাট্যভাবে আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করে। তাই সুস্থ প্রকৃতির অধিকারী কোনো মানুষের পক্ষে আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বীকার করা সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, ‘আসমানগুলো ও জমিনের স্রষ্টা আল্লাহর ব্যাপারে কি কোনো সংশয় আছে?’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ১০)
পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করে কোনো পরম সত্তাই আসমান ও জমিনের প্রকৃত স্রষ্টা ও নিয়ন্তা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি যদি তাদের জিজ্ঞাসা করো, কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, এগুলো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ।’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ৯)
আর যারা স্বাভাবিক অবস্থায় আল্লাহ থেকে বিমুখ থাকে, তাঁকে অস্বীকার করে তারাও দুর্যোগকালে তাঁর কাছেই ফিরে আসে এবং আশ্রয় খোঁজে। পবিত্র কোরআনে এই শ্রেণির অবস্থা এভাবে চিত্রিত করেছে, ‘তিনিই তোমাদের জলে-স্থলে ভ্রমণ করান এবং তোমরা যখন নৌকার আরোহী হও আর এগুলো আরোহী নিয়ে অনুকূল বাতাসে বেয়ে যায়, তখন তারা আনন্দিত হয়। অতঃপর এগুলো বাত্যাহত এবং সর্বদিক থেকে তরঙ্গাহত হয়; তারা তা দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে পড়েছে মনে করে, তখন তারা আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে আল্লাহকে ডেকে বলে, তুমি আমাদের এর থেকে মুক্তি দিলে আমরা অবশ্য কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হবো। ’ (সুরা ইউনুস, আয়াত : ২২)
প্রশ্ন হলো, মানুষ আল্লাহর অস্তিত্বের বিশ্বাস অন্তরে লালন করেও কেন তারা মুখে তা অস্বীকার করে? পবিত্র কোরআনে এর একাধিক কারণ তুলে ধরেছে। যেমন নেতৃত্ব, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব ধরে রাখা। তবে এই শ্রেণির মানুষের জন্য পতন অপরিহার্য। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুসা বলেছিল, তুমি অবশ্যই অবগত আছো যে এসব স্পষ্ট নিদর্শন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালকই অবতীর্ণ করেছেন—প্রত্যক্ষ প্রমাণস্বরূপ। হে ফেরাউন, আমি তো দেখছি তোমার ধ্বংস আসন্ন। ’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১০২)
অহংকার ও অহমিকাও আল্লাহকে অস্বীকার করার অন্যতম কারণ। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা অন্যায় ও উদ্ধতভাবে নিদর্শনগুলো প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলোকে সত্য বলে গ্রহণ করেছিল। দেখো! বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল। ’ (সুরা নামল, আয়াত : ১৪)
Leave a Reply