‘দৌড়াদৌড়ি যখন করতেন না (করবেন না), কাগজ জমা দিয়া বাইরে জিগান (জিজ্ঞাসা করেন) কত টাকা লাগে। খোলাখুলি কই, আমার কাছে জমা দিলে তো সিস্টেমে হইয়া যায়গা (আমার কাছে জমা দিলে সিস্টেমে হয়ে যাবে)। আমরা একজনকে ১০০, আরেকজনকে ২০০ করে দেই। এসিল্যান্ডও কিছু পায়। সরকার আইন করছে কিন্তু স্টাইল এইডা’, বলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) আলমগীর মিয়া চৌধুরী।
২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের এক ভিডিওতে তাকে এসব কথা বলতে শোনা যায়। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
জমির দলিল-সংক্রান্ত কাজে তার কাছে কয়েকজন এলে ওই কথাগুলো বলেন আলমগীর মিয়া চৌধুরী। এ সময় তাকে ও একজনকে টাকা নাড়াচাড়া করতেও দেখা যায়।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তহশিলদার আলমগীর মিয়া চৌধুরী। যদিও ভিডিওটি তারই বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। তার দাবি, ভিডিওতে তার কথা কাঁটছাঁট করে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভলাকুট ইউনিয়নের ভলাকুট গ্রামের শামীম আহম্মেদ। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, জমির খাজনা বাবদ (ভূমি উন্নয়ন কর) ১০ টাকার রশিদ জমা দিতে তহশিলদার আলমগীর মিয়াকে দিতে হয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা। সাধারণ নামজারির জন্য ১১৭০ টাকার সরকারি ফির পরিবর্তে তাকে সাত থেকে আট হাজার টাকা দিতে হয়।
আলমগীর মিয়ার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে নাসিরনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান খান শাওন বলেন, ‘ভলাকুট ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা এরই মধ্যে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও হাতে এসেছে। এ ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে।’
লেনদেনে নিজের নাম উঠে আসার বিষয় উপজেলা সহকারী কমিশনার বলেন, ‘তারা (ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা) অনেক অপকর্মে আমাদের নাম ব্যবহার করে থাকেন। অথচ বিষয়গুলো আমরা বিন্দুমাত্রও জানি না। এ ঘটনা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply