যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। এমন আশঙ্কার মধ্যে রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোনে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়াকে চরম মূল্য দিতে হবে। আজ এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ভিডিওকলে কথা বলেন বাইডেন ও পুতিন। তাদের মধ্যে প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা হয়। এতে বাইডেন বলেন, সামরিক আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনে বড় ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে। এতে রাশিয়ার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। আর হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলো এর কড়া জবাব দেবে। রাশিয়াকে এজন্য চরম মূল্য দিতে হবে।
এদিকে, পুতিন ও বাইডেন ফোনালাপের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অমূলক আশঙ্কা চূড়ায় পৌছেছে। রাশিয়া কবে ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে এমন দিন–তারিখ যুক্তরাষ্ট্র সংবাদমাধ্যমের কাছে বলে দিচ্ছে। আমরা আসলে জানি না, এমন মিথ্যা তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কোথায় পেয়েছেন। ’
অন্যদিকে, সম্ভাব্য রুশ সামরিক আগ্রাসন নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার তীব্র শীত উপেক্ষা করে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী জাতীয় পতাকা হাতে রাজপথে নেমে আসেন। এ সময় তারা ইউক্রেনের জাতীয় সংগীত গান, যুদ্ধবিরোধী ব্যানার–প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশবাসীর উদ্দেশে রুশ আগ্রাসনের হুমকির মুখে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকালে রাজপথে নেমে সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের প্রমাণ দেন ইউক্রেনবাসী।
কিয়েভের সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভকারীরা ‘যুদ্ধ একমাত্র উত্তর নয়’, ‘রাশিয়া বর্ণবাদী’ প্রভৃতি লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করেন। ছোট দুই সন্তান নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন নাজার নভোসেলস্কি। তিনি বলেন, ‘আমরা ভীত নই। আর এ বার্তা দিতেই আমি আজকের মিছিলে এসেছি।’
যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন নাতালিয়া সাভোস্তিকোভা। ৬৭ বছর বয়সী এ চিকিৎসক বলেন, ‘এখন ভীষণ রকমের অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সময় পার করছে ইউক্রেনবাসী। তবে আমরা কী করব, সেটা পুতিন বলে দিতে পারেন না।’
তবে রাশিয়া বরাবরই পশ্চিমাদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করছে। দেশটি বলছে, ইউক্রেনে হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই। মহড়ার অংশ হিসেবে সেনা সমাবেশ ঘটানো হয়েছে। তবে মস্কোর এমন দাবি মানতে নারাজ পশ্চিমারা। সম্ভাব্য রুশ সামরিক অভিযানের আশঙ্কা থেকে নিজেদের নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন ছাড়তে বলা হয়েছে।
Leave a Reply