সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিবন্ধিত হজযাত্রীরা পবিত্র নগরী মক্কায় সমবেত হতে শুরু করেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পবিত্র হজ পালিত হবে করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিতপরিসরে দ্বিতীয় বছরের মতো এবারও হজে অংশ নিতে অন্য দেশ থেকে কেউ অনুমতি না পেলেও সৌদি আরবে থাকা ১৫০ দেশের নাগরিকসহ এবারের হজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ৬০ হাজার মানুষ।
সেই ভাগ্যবান ৬০ হাজার হজযাত্রী গতকাল শনিবার ছুটে গেছেন ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান মক্কায়। আজ রবিবার থেকে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে হজের। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে এ বছরও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্য কোনো দেশের মুসলিমরা হজে যেতে পারছেন না। হজ করছেন শুধু সৌদি আরবের নাগরিক এবং সেখানে যারা বসবাস করেন তারা। তবে অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ টিকা নিতে হয়েছে। গত বছর সৌদি আরব ইসলামের এই মহামিলন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করে। কোনো রকম ভাইরাস সংক্রমণ ছড়ায়নি। এবারও সেই সফলতা ধরে রাখতে চাইছে সৌদি আরব। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গালফ নিউজ।
সৌদি আরবের দাম্মামে বসবাস করেন ভারতীয় একজন কন্ট্রাক্টর আমিন (৫৮)। তিনি এবার হজ করছেন। সঙ্গে নিয়েছেন স্ত্রী ও তিন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানকে। এ সুযোগ পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তিনি। মিসরের ফার্মাসিস্ট মোহাম্মদ আল ইতের বলেন, আমার মনে হচ্ছে লটারি জিতেছি। এই লটারির মূল্য অসীম। আনন্দ আর রাখতে পারছি না। এটা এক বিশেষ সুযোগ। যে কারও জীবনেই এটি এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা এ সুযোগ আমাকে দান করার জন্য। তিনিই হাজার হাজার মানুষের ভেতর থেকে আমাকে গ্রহণ করেছেন।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের আগে ২০১৯ সালে এই হজে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ২৫ লাখ মুসলিম। এ মাসের শুরুতে সৌদি আরবের হজবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তারা স্বাস্থ্য সতর্কতার সর্বোচ্চ লেভেল অনুসরণ করে কাজ করছেন। কারণ মহামারী এবং করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট এখনো চোখ রাঙাচ্ছে। উপসাগরীয় অন্য দেশগুলোর মতোই সৌদি আরবে অবস্থান করেন বিপুলসংখ্যক দক্ষিণ এশিয়া, দূরপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অভিবাসী। ওদিকে এবারের হজকে নিরাপদ করতে পবিত্র কাবা, গ্রান্ড মসজিদকে জীবাণুমুক্ত করতে দেখা গেছে কর্মীদের। আনুষ্ঠানিকভাবে রবিবার পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। তার আগে গতকাল শনিবার হজযাত্রীরা পবিত্র কাবাকে তাওয়াফ করছেন।
সংবাদ সংস্থা আল-আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন স্থানে হাজিদের সেবা দিতে ৪৫টি স্ট্রোক সেন্টার থাকবে। জাবালে রহমত এলাকায় ২৩টি ও মিনা প্রান্তরে থাকবে ২২টি। এ ছাড়া ৪২টি নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র থাকবে। হজের স্থানগুলোতে চিকিৎসাসেবা দিতে কাজ করবে ৩২টি চিকিৎসক দল ও ৩৬টি অ্যাম্বুলেন্স।
ইসলামের ৫ স্তম্ভের একটি হজ। পবিত্র মক্কায় হাজিদের বায়তুল্লাহ জিয়ারত, আরাফাতের ময়দানে অবস্থানসহ আনুষঙ্গিক আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে হজ পালিত হয়। বিত্তবান ও শারীরিক সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ এবং প্রতি বছর কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব।
Leave a Reply