ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় যেখানে রাম মন্দির নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে তার একাংশে কবরস্থান থাকায় মুসলিমরা সেখানে মন্দির নির্মাণ না করার আবেদন জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে মন্দির নির্মাণের জন্য রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের ঘোষণা করেছেন। সেই ট্রাস্টের উদ্দেশ্যে মুসলিমরা চিঠি দিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
অযোধ্যার স্থানীয় ৯টি সংখ্যালঘু মুসলিম পরিবারের দাবি, ১৮৫৫ সালে বাবরী মসজিদ এলাকায় ছিল মুসলিমদের কবরস্থান। সেজন্য কবরস্থানের ওপরে কী রাম মন্দির গড়ে তোলা উচিত? এই প্রশ্নই করা হয়েছে ওই চিঠিতে।
মুসলিমরা বলেছেন, ওই এলাকায় ৪/৫ একর জমি ছিল মুসলিম কবরস্থান। আর সেখানে যাতে রাম মন্দির না তৈরি হয়, সেজন্য আবেদন করা হয়েছে চিঠিতে।
অযোধ্যার বাসিন্দা হাজী মুহাম্মদসহ ন’জন অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য গঠিত কমিটিতে চিঠি দিয়ে বলেছেন ৬৭ একর জমি কেন্দ্রীয় সরকার অযোধ্যা আইনের অধীনে নিয়েছিল এবং এবার তা ট্রাস্টকে দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৪/৫ একর জমিতে কবরস্থানও রয়েছে। ট্রাস্ট সদস্যদের কাছে তাঁদের অনুরোধ, এটা আপনারা বিবেচনা করুন যে কবরস্থানে কী মন্দির নির্মাণ করা যায়?
মুসলিমদের দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে যে আজ সেখানে বর্তমানে কবরস্থান দৃশ্যমান না হলেও এটি একটি কবরস্থান। ১৯৪৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত জায়গাটি অন্যভাবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
স্থানীয়দের পক্ষে আইনজীবী এমআর শামশাদের দাবি, ১৮৫৫ সালের দাঙ্গায় ওই এলাকায় ৭৫ জন মুসলিমকে হত্যা হয়। আর ওই ৪/৫ একর জমিতে সেই মুসলিমদের দাফন সম্পন্ন হয়েছিল। বাবরী মসজিদের চারপাশে যে কবরস্থান রয়েছে, তার সপক্ষে একাধিক যুক্তি দিয়েছেন আইনজীবী এমআর শামশাদ।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ‘করসেবক’ নামধারী একদল উন্মত্ত জনতা। তাদের দাবি, এটি আসলে ভগবান রামের জন্মস্থান। এনিয়ে দীর্ঘকাল ধরে মামলা চলার পরে কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্ট ওই স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেয়। এজন্য সরকারকে ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত। অন্যদিকে, সরকারকে মসজিদের জন্য বিকল্প পাঁচ একর জমির বন্দোবস্ত করতে বলা হয়।
সূত্র : পূবের কলম
Leave a Reply