1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৭ অপরাহ্ন

দলে দলে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১

সোমবার (আগামীকাল) থেকে সারা দেশে কঠোর লকডাউন শুরু হবেÑ গত শুক্রবার সরকারের তরফে এমন তথ্য জানানোর পর দুদিন ধরে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের পথে ছুটতে দেখা গেছে অসংখ্য মানুষকে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে তাই মহাসড়কে ও ফেরিঘাটে ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী গাড়ির চাপ অনেক বেড়ে গেছে। শুধু তাই নয়। এর প্রভাব পড়েছে ঢাকা মহানগরীতেও। গতকাল রাজধানীতে তুলনামূলকভাবে যানজট ছিল অনেক বেশি। এদিকে গতকাল রাতে প্রাপ্ত সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু হবে সীমিত পরিসরে লকডাউন। এ সময় গণপরিহন চলবে না। সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে কিছু প্রতিষ্ঠান।

আর সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে আগামী ১ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে। জানা গেছে, এ সময়কালে শিল্প কারখানা লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হতে পারে। এ ছাড়া রপ্তানিমুখী কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে ব্যাংকিং সেবাও চালু রাখা হতে পারে সীমিত পরিসরে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, ইতিপূর্বের ঘোষণায় আগামীকাল সোমবার থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হলেও অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে।

কাল থেকে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। মার্কেট, হোটেল– রেস্তেরাঁসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হবে। এ সময়ে কিছু কার্যক্রম চালু থাকবে। আর ১ জুলাই থেকে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে। লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া বাকি সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে। এসব বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা আজ রবিবার স্পষ্ট করা হবে।

এর আগে গতকাল সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছিল, সোমবার থেকে সারাদেশে সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হবে। এ সময়ে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

সে সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আপাতত সাত দিনের জন্য কঠোর এ বিধিনিষেধ পালন করা হবে। পরে প্রয়োজন হলে আরও বাড়ানো হবে। এবার এ সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে পালনের জন্য পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে থাকতে পারে।
গত বুধবার রাতে সভা করে দেশে করোনা ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় সারা দেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’ বা সবকিছু বন্ধ রাখার সুপারিশ করে করোনাসংক্রান্তয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীকে আগেই সারা দেশ থেকে ৯ দিনের জন্য বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ জন্য আশপাশের কয়েকটি জেলাসহ দেশের মোট সাতটি জেলায় সার্বিক কার্যাবলি ও চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ঢাকার সঙ্গে দূরপাল্লার বাস, নৌ যোগাযোগ ও রেলসেবা বন্ধ রয়েছে।

গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করে মানুষ। যানবাহন সেভাবে না চললেও সকাল থেকে বাস টার্মিনালে ছিল মানুষের ভিড়। অনেকে রওনা হয়েছেন হেঁটে। দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিকল্প যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করছেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা যেমন খরচ করতে হচ্ছে, তেমনি পদে পদে ভোগান্তিরও শেষ নেই। ভিড়-ব্যস্ত এসব ঘরমুখো মানুষের যাত্রায় উপেক্ষিতও করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধি।

ঝুঁঁকিপূর্ণভাবে এমন যাত্রায় কোনো রকম স্বাস্থ্যবিধি মানার তোয়াক্কা নেই। বিশেষ করে বয়স্ক, নারী ও শিশুরা সর্বাধিক বিপাকে পড়ছেন। তিন-চার গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছুটছে সবাই। সুযোগ বুঝে চড়া দাম হাঁকছেন বিকল্প এসব বাহনের চালকরা, দৌরাত্ম্য বেড়েছে এক শ্রেণির দালালেরও। আর চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে এসব। মানুষের এমন বেপরোয়া চলাচলে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক।
হাসান নামের এক যাত্রী বলেন, গতবার লকডাউনে ঢাকাতেই আটকে পড়েছিলাম। পরে কষ্ট করতে হয়েছে অনেক। তাই এবার গ্রামে ফিরছি। কাজ বা খাদ্যের সমস্যা অন্তত হবে না আশা করি। আর নিম্ন আয়ের মানুষদের পরিবারই তো সবকিছু। তাই গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরছি।

কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার আগেই আরিফ গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম ফিরতে চান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী তাই সকালে এসেছিলেন যাত্রাবাড়ীতে। এসে জানতে পারেন, মাইক্রোবাসে চট্টগ্রাম ফেরার ব্যবস্থা আছে। তবে সরাসরি চট্টগ্রাম পর্যন্ত মাইক্রোবাস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রথমে কুমিল্লা পর্যন্ত যেতে হবে, তারপর আবার কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, কুমিল্লা পর্যন্ত সবার কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে নিচ্ছে। আর কুমিল্লা থেকে গাড়ি পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে। এতে আরও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হতে পারে।

ঢাকা থেকে কুমিল্লায় অনেককেই মোটরসাইকেল ভাড়া করেও যেতে দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে যারা চাঁদপুর দিকে যাচ্ছিলেন, তারা মোটরসাইকেলে প্রথমে কুমিল্লায় যান। আর এতে খরচ পড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।

যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদে যাত্রী, চালক ও সহকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা থেকে মেঘনা ব্রিজ পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এসে ঢাকার লোকাল বাসে করে রাজধানীতে ঢুকতে হচ্ছে। একইভাবে ঢাকা থেকে ফিরতে থেকেও যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ঢাকায় ঢুকছেন ও ঢাকা ছাড়ছেন অনেক মানুষ। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের নিচে ও যাত্রাবাড়ী থানার পাশে অবস্থান করে দেখা যায়, অনেকেই মাইক্রোবাসে ঢাকায় ঢুকছেন। থানার পাশ থেকে অনেকে সরাসরি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাচ্ছেন।

রাজধানীর গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদে বাড়ি ফেরার সময় যানবাহনে যে ভিড় দেখা যায়, এখানে তার মতোই অবস্থা চলছে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলেই ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। তারা হন্যে হয়ে ভাড়ায়চালিত প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস খুঁজছেন। চালকরাও ভাড়া হাঁকছেন দ্বিগুণ-তিনগুণ। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুনেই ফিরছেন গ্রামে।

একাধিক যাত্রী জানান, বাধ্য হয়ে বাড়ির পথে অন্তত যতদূর যাওয়া যায় সিএনজি, মোটরবাইকে যাত্রা করছেন অনেক মানুষ। তাদের অনেককেই হেঁটে রওনা দিতে দেখা গেছে। আবার কেউবা চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যেতে না পেরে পড়েছেন বিপাকে।

মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে অনেক যাত্রীই কুমিল্লা, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামে যাচ্ছেন। মোটরসাইকেল বা মাইক্রোবাসে একইভাবে কুমিল্লা ও এর আশপাশের এলাকা থেকে ঢাকায় ঢুকছেন তারা। যাত্রীরা বলছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বজনের সেবা করতে অথবা জরুরি প্রয়োজনে তারা এভাবে ঢাকায় ঢুকছেন এবং ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন।

এ দিকে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস চালকরাও ভাড়া হাঁকছেন দ্বিগুণ-তিনগুণ। শিহাব নামে এক যাত্রী বলেন, এবার ইচ্ছে ছিল গ্রামে ঈদ করব। তবে ‘লকডাউনে’ তো বাস বন্ধ। খুলবে কিনা তারও ঠিক নেই। করোনার মধ্যে অফিসেও ঝামেলা। তাই সবকিছু পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার আগেই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গ্রামে ফিরছি। যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেশ, হেঁটেই যাত্রা বলা যায় এক রকম।
হাফিজ নামে এক প্রাইভেটকার চালক বলেন, এখন তো সড়কে গাড়ি চলছে না। একেক জায়গায় একেক সমস্যা। আমরা কিছু যাত্রী নিয়ে চলাচল করছি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রিজার্ভ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারাদেশে কাল থেকে সীমিত পরিসরে এবং বৃহস্পতিবার থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ জারির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এ সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে।

আমাদের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি নাদিম হোসাইন জানান, সারাদেশে কঠোর লকডাউনের সরকারি ঘোষণা আসার পর স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে শনিবার মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে যাত্রা করা মানুষের ভিড়। অধিকাংশ যাত্রীর মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট থাকায় ঘাটে আসার আগেই অনেক যানবাহন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও চাপ কমানো যাচ্ছে না। লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলার বন্ধ থাকায় ফেরিতে করেই যাত্রী পারাপার হচ্ছে। তবে গণপরিবহন না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যেতে নানা বিড়ম্বনায় পড়ছে হচ্ছে লোকজনকে। শনিবার ভোর থেকেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে যাত্রা করা মানুষের ভিড় বেড়েছে পদ্মার এ ঘাটে। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই হাজার হাজার মানুষ ফেরিতে গাদাগাদি করে পাড়ি দিচ্ছে পদ্মা। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকটি পয়েন্টে ও শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশ মুখে রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। চেকপোস্টে যাত্রী চলাচল নিয়ন্ত্রের চেষ্টা করছে পুলিশ।

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থেকে ঢাকামুখী যাত্রী রাশেদ ইসলাম বলেন, আমার বুকে ও ঘাড়ে ভীষণ ব্যথা। তাই বাধ্য হয়ে লকডাউনের মধ্যেও ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছি। গোসাইরহাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসতে আগে ১৫০ টাকা খরচ হতো। আর এখন সেখানে ৫০০ টাকা খরচ হয়ে গেছে। ঢাকায় যেতে আরও অন্তত ৩০০ টাকা লাগবে।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটে সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ জানান, সকাল থেকে যাত্রীদের কিছুটা ভিড় রয়েছে। তবে গাড়ির চাপ নেই।
লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী লকডাউনের আওতামুক্ত গাড়ি পারাপারের কথা থাকলেও যাত্রীরা ঘাটে আসছে। যাত্রী নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাদের নয়। সকালের দিকে দক্ষিণ বঙ্গগামী যাত্রীদের চাপ ছিল তবে দুপুরের পর থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের চাপ বেশি দেখা গেছে। বর্তমানে ঘাট এলাকায় কোনো গাড়ি পারপারের অপেক্ষায় নেই।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সুপারিন্টেন্ডেন্ট মেহেদী হাসান জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের ১৫টির মধ্যে ১৪টি ফেরিই চলাচল করছে। লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী ফেরিতে শুধু রোগী বহনকারী গাড়ি এবং জরুরি পণ্য পরিবহনের গাড়ি ছাড়া সবকিছু পারাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঘাটে ভিড় জমাচ্ছেন যাত্রীরা।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জাকির হোসেন জানান, লকডাউনের নির্দেশনা মানার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু যাত্রীরা বিভিন্নভাবে ঢাকা থেকে ঘাটে আসছে। আবার বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসা যাত্রীরা ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করছে।
পিরোজপুর প্রতিনিধি খালিদ আবু জানান, সংক্রমণ প্রতিরোধে পিরোজপুর জেলায় ঘোষিত ৭ দিনের লকডাউনের প্রথম দিন গতকাল তেমনভাবে দেখা যায়নি বিধিনিষেধ। গতকাল শনিবার শহরের প্রায় সব দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠা ছিল খোলা; চলেছে সব ধরনের যানবাহন।
জেলা প্রশাসক ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, জেলায় করোনা পরিস্থিতি অবনতিশীল। লকডাউন সফল করার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে থেকে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে যাচ্ছেন। এখনো যারা লকডাউন ঠিকমতো মানছে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুর প্রতিনিধি শফিক স্বপন জানান, লকডাউন কার্যকর করতে কিছুটা কঠোর প্রশাসন। পঞ্চম দিনে জেলার গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। তবে সাধারণ মানুষ প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করেই ঘরের বাইরে আসছে। অপরদিকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। ২২ জুন সকাল থেকে মাদারীপুরে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন। লকডাউনে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় ট্রাক, ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যান চলাচল করছে। তবে খোলা রাখা হয়েছে মাদারীপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক সড়ক। লকডাউন মানার প্রবণতা নেই মাদারীপুরের জনগণের মধ্যে। প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ। পুলিশের চেকপোস্ট থাকলেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদারীপুর শহরের অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন যানবাহনে করে শহরে প্রবেশ করছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মাহেন্দ্রসহ বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে উপস্থিত হচ্ছে এবং ঢাকা থেকে আসা যাত্রীরা ঘাট থেকে এসব যানবাহনে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছেন।

নারায়ণগঞ্জ থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক আবু সাউদ মাসুদ জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ঢাকাগামী বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে অনেকেই হেঁটে রাজধানীর দিকে রওনা হয়েছেন। তবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীসংখ্যা তুলনামূলক কম। শনিবার (২৬ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। মামুন মিয়া নামে একজন বলেন, ‘আমি গাবতলী যাব। শুনেছি সাইনবোর্ড থেকে গাড়ি পাওয়া যায়। কিন্তু গাড়ি না থাকায় এখনো সাইনবোর্ড যেতে পারিনি।’

শামীমা আক্তার নামে এক নারী বলেন, ‘বাবাকে বারডেম হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যাব। ঘণ্টাখানেক সময় দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু গাড়ি পাচ্ছি না।’ চয়ন সরকার নামে এক যুবক বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্বরোড যাব। দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। সরাসরি গন্তব্যস্থলে পৌঁছার কোনো পরিবহন নাই।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের টিআই (এডমিন) কামরুল ইসলাম বেগ বলেন, ‘লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ তৎপর রয়েছে। চালক ও হেলপাররা বাস নিয়ে বের হলেই মামলা দেওয়া হচ্ছে।’ কিন্তু মানুষ হেঁটে চলাফেরা করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com