1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৮ অপরাহ্ন

ডাকসু নির্বাচন সময়মতো হবে?

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

দীর্ঘ ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙে গত বছর অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। আগামী মার্চে শেষ হবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। এ অবস্থায় নতুন করে শুরু হয়েছে ডাকসু নির্বাচনের আলোচনা। গত এক বছরে ডাকসু নেতাদের নানা সফলতা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে ছিল ব্যর্থতাও। এর পরও সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা চাচ্ছেন ডাকসু নির্বাচনের এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক। শিক্ষার্থীদের ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে তাদের কল্যাণে ভূমিকা রাখুক।

গত বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় এক বছর মেয়াদের ডাকসু নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২৩টি পদের মধ্যে কেবল ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদক বাদে অন্য সব পদে বিজয়ী হয় ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগ মনোনীত প্যানেলের প্রার্থীরা। জিএস পদে ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও এজিএস পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন জয়লাভ করেন। অন্যদিকে ভিপি পদে নুরুল হক নুর ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফরমে গড়ে ওঠা সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে জয়লাভ করে। দেশের অন্যতম বৃহৎ ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের কেউই জয়লাভ করতে পারেনি।

নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা কর্মসূচি পালন করেছে ডাকসু। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফলতা থাকলেও শিক্ষার্থীদের গণরুম সমস্যার সমাধান, সিট সংকট, খাবারের মান বৃদ্ধিসহ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ ছিল না নির্বাচিত প্রতিনিধিদের। এর বাইরে ডাকসুর নির্বাচিত নেতারা সক্রিয় ছিল নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, গত এক বছরে ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আশানুরূপ সাফল্য দেখাতে পারেননি। এর পরও নির্বাচনের এ ধারা অব্যাহত রাখা উচিত। নির্বাচনের ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আরও বেশি দায়বদ্ধ থেকে কাজ করবেন নির্বাচিতরা।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙে যে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে আমরা চাই সেটা অব্যাহত থাকুক। আমি ব্যক্তিগতভাবে নির্দিষ্ট সময়ের পর একদিনও থাকতে চাই না। কিন্তু বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচন দিতে আগ্রহী নয়। কারণ নির্বাচনের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকারের বিষয়ে কথা বলেছে। ছাত্রলীগের একক আধিপত্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। ডাকসু নির্বাচনের আগে ছাত্রলীগের যে একক আধিপত্য ছিল তা অনেকটা কমে গেছে। এই লেজুড়বৃত্তি প্রশাসন ছাত্রলীগের আধিপত্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য ডাকসু নির্বাচন দিতে আগ্রহী নয়। তিনি বলেন, অনেকে সময়সীমা বাড়ানোর কথা বলে কিন্তু আমি বাড়ানোর বিপক্ষে। নির্বাচনের বিষয়ে গত কার্যনির্বাহী সভায় সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন আলোচনা করতে চাইলে ছাত্রলীগ প্যানেলের সদস্যরা বিরোধিতা করেন। তখন ভিসি স্যারও কোনো মন্তব্য করেননি। তা হলে বোঝা যাচ্ছে, এ ডাকসু প্রতিনিধিরা নির্বাচন চান না। আমি চাই দায়িত্ব শেষ হওয়ার মধ্যেই যেন আরেকটি নির্বাচন হয় এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারি। নির্বাচন হওয়ার মাধ্যমে কিছুটা হলেও সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চার পথ সৃষ্টি হয়েছে। তাই নির্বাচনের ধারাবাহিকতা জরুরি।

ডাকসু নির্বচনের বিষয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ডাকসু নির্বাচন করার দায়িত্ব বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের। আমরা গতবার পরিবেশ পরিষদের মিটিংয়ে একটা দাবি জানিয়েছিলাম ডাকসু নির্বাচন যেন একাডেমিক ক্যালেন্ডারে পরিণত হয়। আমাদের প্রত্যাশা ৩৬৫ দিনের মধ্যে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। নির্ধারিত সময়ের এক সেকেন্ডের বেশি সময় দায়িত্বে থাকতে চাই না। আমরা শুধু নির্বাচিত হয়ে এক বছর দায়িত্ব পালন করেছি। এর মাধ্যমে আমাদের দায়িত্ব শেষ নয়। নতুন করে শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারেন, নতুন নেতৃত্বের বিকাশ হয় এবং ডাকসুর কর্মকা-কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তা নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আমরা মনে করি ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তবে তাদের এ বিষয়ে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে সাদ্দাম হোসাইন বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে গত এক বছরে কোন সংগঠন বেশি কাজ করেছে তা শিক্ষার্থীদের কাছে দৃশ্যমান। শিক্ষার্থীদের সব অধিকার আদায়ে, তাদের সংকট দূরীকরণে ছাত্রলীগকে পাশে পেয়েছে। আমরা সাংগঠনিকভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি ডাকসু নির্বাচনের জন্য। আমরা মনে করি যে কোনো সময় নির্বাচন হলে ছাত্রলীগ পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হতে পারবে।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, আমরা যখন ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আন্দোলন করেছি তখনই বলেছি বিশ^বিদ্যালয়ের একটা একাডেমিক ক্যালেন্ডার থাকবে সেখানে ডাকসু নির্বাচন বছরের কখন হবে তা উল্লেখ থাকবে। কিন্তু সেটা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন করেনি। এখন বর্তমান ডাকসুর মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে কিন্তু নতুন নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। আমরা সন্দিহান আসলে তারা আবার ডাকসু নির্বাচন করবে কিনা। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের আহ্বান ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া এবং সেটা প্রতিবছর কখন হবে তা একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সময় আমরা দেখি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্দিষ্ট একটা টাইম থাকে কিন্তু ডাকসু নির্বাচনের সময় এ রকম কিছু দেখতে পাচ্ছি না। এখনো কোনো নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি করেনি। গতবারের নির্বাচনের নিয়ে ছাত্রলীগ বাদে সব প্যানেলের বিভিন্ন রকম প্রশ্ন-আপত্তি ছিল। সে জন্য এবারের নির্বাচনকে কীভাবে ভালো করা যায় সেটা নিয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে মিটিং করার দরকার ছিল। এ ধরনের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের মিটিং ডাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে ছাত্রদলের মন্তব্য জানার জন্য তাদের শীর্ষ নেতাদের একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

কবে হতে পারে ডাকসু নির্বাচন এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদাধিকার বলে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। অনুমান করে মন্তব্য করা যাবে না। যেটা যেখানে আছে, সেটা সেখানে থাকুক। তবে যথাসময়ে সব কিছু হবে। সব বিষয় দেখে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে আওয়ামী লীগ তা স্বাগত জানাবে। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগও তার জায়গা থেকে প্রার্থিতা করবে। নির্বাচন কবে হবে এটা নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com