মুঠোফোনে কল করে নারী কণ্ঠে কথা বলে ও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে সুন্দরী তরুণীদের ছবি ব্যবহার করে প্রেমের সম্পর্ক গড়তেন ছাত্রলীগকর্মী ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলামসহ কয়েকজন। বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন তরুণের সঙ্গে এমন সম্পর্ক গড়ে ডেকে এনে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিতেন তারা। সর্বশেষ মো. আইয়ুব খান (২৮) নামে এক এনজিও কর্মীর সঙ্গে কথা বলা ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তারা। তার কাছ থেকেও সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া হয়। তবে এবার পার পাননি ছাত্রলীগের এসব কর্মী। গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের হাতে।
‘সাজেদা ফাউন্ডেশন’ নামে একটি এনজিও’র চট্টগ্রামের ভুজপুর শাখার অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন ভুক্তভোগী আইয়ুব খান। তার বাড়ি ভুজপুর থানার জজখোলা মহানগর এলাকায়। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে ডেকে এনে সর্বস্ব লুটে নেয় ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন। সোনাগাজী-কাশ্মীর বাজার সড়কের পৌরসভার চর গনেশ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
পরে শুক্রবার রাতেই বাদি হয়ে সোনাগাজীর স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলাম, আবু বক্কর ছিদ্দিকসহ অজ্ঞতানামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন আইয়ুব। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল শনিবার তাদের আদালতে তোলা হয়, পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান।
ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ জানায়, আসামিরা ফেসবুকে সুন্দরী তরুণীদের ছবি ব্যবহার বিভিন্নজনকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। এরপর তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে মোবাইল নম্বর নেয়। কল দিয়ে নারীকণ্ঠে কথা বলে সোনাগাজীতে ডেকে এনে জিম্মি করে টাকা, মুঠোফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। গতকাল আইয়ুবের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। ফোনে কল পেয়ে আইয়ুব আসামিদের বলা জায়গায় গেলে ইমাম, মশিউর, ফখরুল, ছিদ্দিকসহ পাঁচ থেকে ছয়জন তাকে আটক করে বেদম মারধর করে। তার কাছ থেকে নগদ টাকা, মুঠোফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। আইয়ুবের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ইমাম ও মশিউরকে আটক করে পুলিশে দেন, অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে, আহত অবস্থায় আইয়ুবকে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আইয়ুব খানের দাবি, তাকে জিম্মি করে ১২ হাজার ৪০০ টাকা, ১টি মুঠোফোনসহ তার সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস ছিনিয়ে নিয়েছে আসামিরা। পরে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ফেলে চলে যায়। বর্তমানে তিনি ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা একইভাবে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
Leave a Reply