মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের বিল গেটসের সঙ্গে তার স্ত্রী মেলিন্ডার প্রথম দেখা হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। এরপর দীর্ঘ সাত বছর প্রণয়ে আবন্ধ ছিলেন তারা, এরপর বিয়ে। এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিল ও মেলিন্ডার সম্পর্কের শুরুটা ছিল পেশাভিত্তিক। ১৯৮৭ সালে প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে মাইক্রোসফটে যোগ দিয়েছিলেন মেলিন্ডা। ওই বছরই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রতিষ্ঠানের একটি আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলেন তারা। এরপর থেকেই মূলত শুরু।
সেই ২৭ বছরের সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চাইছেন দুজন। গত সোমবার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগযোগমাধ্যম টুইটারে পোস্ট করে নিজেদের মধ্যকার বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন বিল গেটস ও মেলিন্ডা। গতকাল বিবিসির করা আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরোপুরি বিচ্ছেদের আগে নিজেদের সম্পদ কীভাবে ভাগ করবেন সে বিষয়ে একমত হয়েছেন। বিলিয়নেয়ার দম্পতি কীভাবে তাদের সম্পত্তি ভাগাভাগি করবেন, সে ব্যাপারে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। তবে, ১৯৯৪ সালে বিয়ের আগে সম্পদ নিয়ে তাদের যে চুক্তি, সেটিতে স্বাক্ষর করেননি গেটস দম্পতি।
গত সোমবার সিয়াটেলের একটি আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন বিল ও মেলিন্ডা। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দ্রুত প্রতিবেদন হয়ে যায়। পত্রিকাগুলোতে বলা হয়েছে, বিল ও মেলিন্ডা আদালতে বিচ্ছেদের জন্য যে আবেদন করেছেন, তাতে ‘অনিবার্য কারণে বিয়ে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না’ বলে তারা উল্লেখ করেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গেটস দম্পতি বলেছেন, আমরা আদালতকে আমাদের বিবাহ ভেঙে দিতে বলেছি। এ ছাড়া আমাদের যে সম্পত্তি রয়েছে বা ব্যবসায়িক স্বার্থে আমাদের যে সম্পদ হয়েছে; তা আমাদের বিচ্ছেদের চুক্তি অনুসারে বিভক্ত করা উচিৎ বলে আদালতকে জানিয়েছি। তবে, বিলিনিয়র এ দম্পতির কত পরিমান সম্পদ রয়েছে বা তাদের মধ্যে কী চুক্তি হয়েছে, তা প্রকাশ পায়নি।
আদালতে বিল ও মেলিন্ডার বিয়ে বিচ্ছেদের আইনি লড়াইয়ের জন্য তিনজন আইনজীবী নিযুক্ত হয়েছেন। মেলিন্ডার আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে রবার্ট কোহেনকে। যিনি এর আগে ইভানা ট্রাম্প, মাইকেল ব্লুমবার্গ এবং ক্রিস রকের মতো ক্লায়েন্টদের হয়ে কাজ করেছেন। বিল গেটস কাদের নিয়োগ দিয়েছেন তা জানা যায়নি।
গত সোমবার দেওয়া টুইট বার্তায় বিল ও মেলিন্ডা বলেছেন- নিজেদের সম্পর্কের ওপর অনেক চিন্তাভাবনা করার পর আমরা আমাদের সংসারের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যুগল হিসেবে আমরা আর একসাথে থাকতে পারবো বলে আমাদের মনে হয় না।
বিল ও মেলিন্ডা আরও বলেন, ‘গত ২৭ বছরে আমরা অসাধারণ তিনটি সন্তান পেয়েছি। এমন একটা ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছি, যে ফাউন্ডেশন বিশ্বজুড়ে মানুষকে স্বাস্থ্যকর ও সক্ষম করে গড়ে তুলতে কাজ করছে। আমরা যে বিশ্বাস থেকে ওই ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করেছি, সেটা থাকবে। এই ফাউন্ডেশনের কাজ একসঙ্গে চালিয়ে যাব। কিন্তু আমরা আর এটা বিশ্বাস করতে পারছি না যে, আমাদের জীবনের পরের ধাপে দম্পতি হিসেবে আমরা একসঙ্গে থাকতে পারব।’
উল্লেখ্য, আশির দশকের শেষের দিকে মেলিন্ডা মাইক্রোসফটে যোগদানের পর বিল গেটসের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। তারা একসঙ্গে দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ গড়ে তোলেন। এ ফাউন্ডেশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে।
Leave a Reply