শ্রীলঙ্কার ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চীনের সরবরাহ করা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেশের নাগরিকদের দেওয়া হবে না। দেশটিকে দেওয়া চীনের ছয় লাখ ভ্যাকসিনের ব্যবহার নিয়ে সেখানকার সরকারি ও বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শ্রীলঙ্কার দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব মেডিকেল স্পেশালিস্টসের (এএমএস) প্রেসিডেন্ট ডা. লালনন্থা রানাসিংহের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন সরবরাহে ইচ্ছুক দেশগুলোর আবেদন পর্যালোচনা এবং শ্রীলঙ্কায় এ ধরনের ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের পক্ষে বিজ্ঞানসম্মত পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করেছে ন্যাশনাল মেডিসিন রেগুলেটরি অথরিটি (এনএমআরএ)। এই প্যানেল ১৭ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের সমাপ্তিতে বলা হয়েছে, সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের সুরক্ষা, কার্যকারিতা এবং রোগপ্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে সরবরাহকৃত তথ্য পর্যাপ্ত নয়। ভ্যাকসিনটি প্রস্তুতকারী কোম্পানির সব তথ্য পর্যালোচনা করার পরই এই মতামতে এসেছি আমরা। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ি শ্রীলঙ্কায় ভ্যাকসিনটি ব্যবহার করা হবে না।
অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল রিসার্চার এবং ইনস্টিটিউট অব হেলথ পলিসির পরিচালক ডা. রবীন্দ্র রান্নান-ইলিয়াওয়ের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, সিনোফার্ম ভ্যাকসিন নিয়ে চীন পর্যাপ্ত তথ্য দেয়নি। তিনি বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া না হয় এবং এই তথ্য রেগুলেটরি বিভাগকে সন্তুষ্ট না করে; ততদিন আমি ভ্যাকসিনটি স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের অনুমতি দেব না।; হংকংও এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেয়নি বলেও তিনি জানান।
ডেইলি মিররের খবরে বলা হয়েছে, চীনের তৈরি অন্য আরেকটি ভ্যাকসিন সিনোভ্যাকের অনুমোদন দিয়েছে এ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটি। আমার ধারণা সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়ার কারণেই তা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কা সরকারও সিনোভ্যাককে আবেদন করার আহ্বান জানাবে বলে মনে করেন ডা. রবীন্দ্র রান্নান-ইলিয়াওয়ে।
শ্রীলঙ্কার প্রধান মহামারিবিদ (ইপিডেমিয়োলজিস্ট) ডা. সুদাধ সামারাওয়েরা জানিয়েছেন, কলম্বো, ক্যান্ডি, পোত্তালাম এবং হাম্বানটোটায় অবস্থানরত চীনা নাগরিকদেরই শুধুমাত্র এখন ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এখানকার কর্তৃপক্ষরা জনসাধারণকে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে ডব্লিউএইচওর অনুমোদনের অপেক্ষা করছে।
Leave a Reply