মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো ক্র্যাকডাউনে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। খবরে বলা হচ্ছে, নিহতদের লাশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছে, এবং হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়ত কখনোই জানা যাবে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দেশটির গণমাধ্যমকে বলেছেন, সৈন্যরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছিল এবং নড়াচড়া করে এমন যেকোন কিছুর ওপরই গুলি চালিয়েছে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৬০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য সামরিক বাহিনী দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়েছে।
ইয়াঙ্গন শহরের কাছে বাগো শহরে এই সহিংসতা শুক্রবার ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে, কিন্তু গণমাধ্যমের কাছে এই খবর পৌঁছাতে পুরো এক দিন লেগেছে। কারণ শহরের বহু বাসিন্দাকে বাধ্য হয়ে আশপাশের গ্রামে পালিয়ে যেতে হয়েছিল।
মনিটরিং গ্রুপ অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস এএপিপি বলছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি ছিল।
সংবাদ সংস্থা দ্য মিয়ানমার নাউ বিক্ষোভের আয়োজন ইয়ে হুটুটকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘এটা গণহত্যার মতোই। তারা প্রতিটি ছায়ার দিকে গুলি ছুড়েছে।’
ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির সেনাবাহিনী এক বছরব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি। তখন থেকে মিয়ানমার জুড়ে গণবিক্ষোভ চলছে।
সশস্ত্র বাহিনীর দাবি, গত বছরের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে যাতে দেশটির নেতা অং সান সুচি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি এনএলডি পুনঃনির্বাচিত হয় এবং সরকার গঠন করে।
নির্বাচন কমিশন এই দাবি নাকচ করে আসছে।
শুক্রবার উৎখাত হওয়া সংসদ সদস্যরা এবং জাতিসঙ্ঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সাথে দেখা করেন।
তারা দেশটির সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো এবং অস্ত্র অবরোধ বা আর্মস এমবার্গো ও নো-ফ্লাই জোন করার মতো ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।
জাতিসঙ্ঘে ওই বৈঠকে আরো সতর্কতা দেয়া হয় যে মিয়ানমার, ‘রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা রিচার্ড হোর্সে বলেছেন, সামরিক শাসনের ফলে দেশটিতে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে দেশটি শাসনের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।
সূত্র : বিবিসি
Leave a Reply