1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন

জুন-জুলাইয়ে পাণ্ডলিপি জানুয়ারিতে নতুন বই

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১

সম্পূর্ণ নতুন পাঠ্যক্রমের আলোকে তৈরি পাঠ্যবই ২০২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নতুন পাঠ্যক্রমের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এখন চলছে

পাঠ্যক্রম প্রণয়নের কার্যক্রম। সেই অনুযায়ী নতুন বইয়ের পা-ুলিপি আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। এর পরই নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন পাঠ্যক্রমের বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে চায় এনসিটিবি।

জানা গেছে, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত অভিন্ন পদ্ধতির শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হচ্ছে। বিদ্যমান শিক্ষাক্রমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম যোগ্যতাভিত্তিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম উদ্দেশ্যভিত্তিক। এর ফলে শিক্ষাক্রম

রূপরেখায় ভিন্নতা তৈরি হয়। এক স্তর থেকে আরেক স্তরে উন্নীত হলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় খাপ খাওয়াতে সমস্যা হয়। এতে মাধ্যমিকে গিয়ে ঝরে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী। এ জন্য এবার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম হবে।

এনসিটিবির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে জানিয়েছেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। বিদ্যমান কারিকুলামের সমস্যা হচ্ছে- প্রাথমিকের শিশুরা যখন মাধ্যমিকে যায়, তাদের পাঠ্যক্রম ভিন্ন হয়। দুই

স্তরের পাঠ্যক্রম দুই পদ্ধতির। এতে লেখাপড়ায় বড় ধাক্কা লাগে। প্রাথমিকে পড়ানো হয় যোগ্যতাভিত্তিক পাঠ্যক্রম আর মাধ্যমিকে পড়ানো হয় উদ্দেশ্যভিত্তিক। দুই স্তরের মাঝে সেতুবন্ধ হয়নি লেখাপড়ায়। এবার নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে কাজ করার সময় সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুই স্তরের পাঠ্যক্রমে একটি সেতুবন্ধ থাকতে হবে। সেভাবে পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করছে এনসিটিবি।

এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, শিক্ষাক্রম পরিমার্জন প্রক্রিয়ায় আমরা শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন কার্যকারিতা এবং শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, চাহিদা নিরূপণ, গবেষণা, পর্যালোচনা, কর্মশালা ইত্যাদি থেকে প্রাপ্ত তত্ত্ব, তথ্য, সুপারিশের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা প্রণয়ন করছি। তিনি আরও বলেন, নতুন পাঠ্যক্রমে একজন শিক্ষার্থীর যেসব ‘মূল্যবোধ’ তৈরি হবে সেগুলো হলো- সংহতি, শ্রদ্ধা, শুদ্ধাচার, দেশপ্রেম, সম্প্রীতি, পরমতসহিষ্ণুতা, সামগ্রিকতা। ‘গুণাবলি’ তৈরি হবে- পরিশ্রমী, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, উদ্যোগী, নান্দনিক, মানবিক এবং দায়িত্বশীল।

‘মূল দক্ষতা’ হবে-সূক্ষ্ম চিন্তন দক্ষতা, সৃজনশীল চিন্তন দক্ষতা, সমস্যা সমাধান দক্ষতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ দক্ষতা, সহযোগিতা দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতা, বিশ্ব নাগরিক দক্ষতা, জীবিকায়ন দক্ষতা, স্ব-ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং মৌলিক দক্ষতা। শিশুর শিক্ষন ক্ষেত্র হবে- ভাষা ও যোগযোগ; গণিত ও যুক্তি; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি; সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব; জীবন ও জীবিকা; পরিবেশ ও জলবায়ু; মূল্যবোধ ও নৈতিকতা; শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা; শিল্প এবং সংস্কৃতি।

নতুন পাঠ্যক্রমের রূপকল্প হচ্ছে- এমন একটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি করা, যারা জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি ধারণ করে পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেকে উৎপাদনমুখী সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।

নতুন কারিকুলামের বিষয়ে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী আগামী জুনের মধ্যে নতুন বই প্রণয়নের কাজ শেষ করা হবে। এরপর ২০২২ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন বই দেওয়া শুরু হবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন এনসিটিবির কেউ কেউ। একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, নতুন বই জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছাতে হলে এখনই (মার্চ) পা-ুলিপি চূড়ান্ত করতে হবে। এর পর ছাপানোর কার্যক্রমের জন্য টেন্ডারসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ হবে জুনের মধ্যে। তা হলে যথাসময়ে বই বিতরণ করা সম্ভব হবে। তা না হওয়ায় সামনে বড় চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন তারা।

নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অর্জনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সাধারণভাবে বলা হয়, একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা সমন্বিতভাবে অর্জিত হলে তার যোগ্যতা গড়ে ওঠে। বিষয়টিকে উদাহরণ দিয়ে এনসিটিবির এই কর্মকর্তা বলেন, একজন শিক্ষার্থী একটি গাড়ি কিভাবে চালাতে হয়, তা যখন বই পড়ে বা শুনে বা দেখে জানতে পারে, তখন তার জ্ঞান অর্জিত হয়। ওই শিক্ষার্থী যদি গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্র হাতে-কলমে পরিচালনা করতে শেখে, অর্থাৎ সামনে, পেছনে, ডানে-বাঁয়ে চালাতে পারে, ব্রেক করতে পারে, তখন তার দক্ষতা তৈরি হয়। আর যদি সে গাড়ি চালিয়ে নিজের ও রাস্তার সব মানুষ, প্রাণী ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষা করে গন্তব্যে পৌঁছানোর সক্ষমতা অর্জন করে, তখন তার গাড়ি চালনার বিষয়ে যোগ্যতা অর্জিত হয়।

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ২০২২ সালে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বই পাবে। পঞ্চম শ্রেণির নতুন বই পরের বছরেও যেতে পারে। তিনি বলেন, নতুন পাঠ্যক্রম ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী কারিকুলাম প্রণয়ন করা হচ্ছে। আশা করছি, জুন-জুলাইয়ের মধ্যে নতুন কারিকুলামের ভিত্তিতে বইয়ের পা-ুলিপি তৈরির কাজও সম্পন্ন হয়ে যাবে। আমাদের লক্ষ্য আগামী শিক্ষাবর্ষেই যেন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবই তুলে দিতে পারি।

সবশেষ ২০১২ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয়েছিল। ২০১৭ সালে এটি পর্যালোচনার কথা ছিল। সারাবিশ্বে প্রতি ৫-৭ বছর পরপর কারিকুলাম পরিবর্তন করা হয়। সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মানবসম্পদ উন্নয়ন, দক্ষতা তৈরি, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট চাহিদা অনুযায়ী সুশিক্ষিত নাগরিক গড়ে তোলার জন্য দরকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। এ জন্য পাঠ্যক্রম (কারিকুলাম) সময়ের চাহিদায় ভিন্ন ভিন্ন হয়। এ কারণে পাঠ্যক্রম পরিবর্তন পরিমার্জন হয়ে আসছে বিভিন্ন সময়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com