রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হামিদুর রহমান। পরপর তিন ছেলের বাবা হন, কিন্তু মেয়ে চাইছিলেন তিনি। চতুর্থবার চেষ্টা করেন, তারপরও ছেলের জন্ম দেন তার স্ত্রী। জন্মের ৪৮ দিনের মাথায় ঘুমন্ত সন্তানকে খুন করেন তিনি। পরে ছেলে সুইম বাবুর মরদেহ বাড়ির পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেন হামিদ। সন্দেহ হলে তাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বাবা মামলা করেন। আদালতে তোলা হলে সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত সোমবার বদরগঞ্জ উপজেলা গোপীনাথপুর ইউনিয়নের আরাজী দিলালপুর বানিয়াপাড়া এলাকার ডোবা থেকে হামিদের চতুর্থ সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গেছে, গত রোববার রাতে ঘুমন্ত সুইম বাবুকে তুলে নিয়ে যান হামিদ। পরে তাকে হত্যা করে বাড়ির পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেন। পরে এলাকায় অপপ্রচার চালান, তার চতুর্থ ছেলে সন্তানকে জিন বা ভুতে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে।
গত সোমবার সকাল ৬টার দিকে বাড়ির পাশে ডোবা থেকে ৪৮ দিন বয়সী শিশু সুইম বাবুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ হামিদ ও তার স্ত্রীকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে নিজ সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন হামিদ।
এ ঘটনায় সুইম বাবুর দাদা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় ছেলে হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে নাতিকে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় হামিদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার রংপুরের বদরগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন হামিদ। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মেয়ে সন্তানের আশায় পর পর চারটি ছেলের জন্ম হওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল হামিদুর। আদালতে তিনি সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট হাতে আসলে শিশুটিকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তা পরিষ্কার হবে।’
Leave a Reply