রাজধানীর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা শাহিন আলম। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বড় ভাইয়ের কবরের জায়গায় সমাহিত করা হয়েছে নব্বইয়ের দশকের এই চিত্রনায়ককে। এসময় চিত্রনায়ক ওমর সানী এবং শাহীন আলমের পরিবাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শাহিন আলমের ছেলে ফাহিম নূর আলম বলেন, ‘সকালে বাবার লাশ বনানী কবরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে আসার পর অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে আমাদের। আমার চাচার কবরের স্থানে বাবার মরদেহ দাফনের কথা ছিল। কিন্তু কবর কমিটির লোকেরা তাতে বাধা দেয়। তাদের বক্তব্য, মেয়রের অনুমতি নিয়ে সেখানে দাফন করতে হবে। অবশেষে সে অনুমতি নিয়েই চাচার কবরের স্থানে বাবাকে রেখে এলাম।’
এদিকে, বন্ধু ও সহকর্মীর বিদায়ে শোকাহত চিত্রনায়ক ওমর সানী। এক ফেসবুকবার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘শেষ বিদায় দিয়ে আসলাম ভোরবেলায় বনানী কবরস্থানে, বন্ধু শাহিন আলমকে। বন্ধু অমিত হাসান, মিশা সওদাগর, শাহিন আলম আর আমি এক সময় পথ চলা। তুই ফাঁকি দিয়ে চলে গেলি। অনেক কিছু লিখতে চাইলাম কোথায় যেন আটকে যাচ্ছি… থাক বন্ধু। আল্লাহ তোকে জান্নাত নসিব করুন আমিন।’
এর আগে, বাদ ফজর নিকেতন মসজিদে তার জানাজা হয়। সেখানে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কাউকে দেখা যায়নি।
গতকাল সোমবার রাত ১০টা ৫ মিনিটে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চিত্রনায়ক শাহিন আলম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ শনিবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
১৯৮৬ সালে বিএফডিসির নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে সিনেমায় পা রাখেন শাহিন আলম। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘মায়ের কান্না’। এটি ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সিনেমায় অনিয়মিত ছিলেন। ব্যস্ত ছিলেন নিজ ব্যবসা নিয়ে।
তার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘ঘাটের মাঝি’, ‘এক পলকে’, ‘গরিবের সংসার’, ‘তেজী’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘প্রেম প্রতিশোধ’, ‘টাইগার’, ‘রাগ-অনুরাগ’, ‘দাগী সন্তান’, ‘বাঘা-বাঘিনী’, ‘আলিফ লায়লা’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আঞ্জুমান’, ‘অজানা শত্রু’, ‘দেশদ্রোহী’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘আমার মা’, ‘পাগলা বাবুল’, ‘শক্তির লড়াই’, ‘দলপতি’, ‘পাপী সন্তান’, ‘ঢাকাইয়া মাস্তান’, ‘বিগ বস’, ‘বাবা’, ‘বাঘের বাচ্চা’, ‘বিদ্রোহী সালাউদ্দিন’ ইত্যাদি।
Leave a Reply