1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৭ অপরাহ্ন

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম এবং ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) তিনি এ আগুনঝরা ভাষণ দেন। শোষিত বঞ্চিত মানুষের মনের অব্যক্ত কথা যেন বের হয়ে আসে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রতিটি উচ্চারণে, প্রতিটি বর্ণে, শব্দে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি উচ্চারণ ধ্বনিত- প্রতিধ্বনিত হতে থাকে লাখো প্রাণে। গগনবিদারী আওয়াজ তুলে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সমর্থন জানায় উপস্থিত লাখো জনতা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।

৭ মার্চের আগের চার-পাঁচ দিনের ঘটনাবলিতে বিক্ষুব্ধ মানুষ ওই দিন নতুন কর্মসূচির অপেক্ষায় ছিল। সকাল থেকেই চারদিক থেকে মানুষের ঢল নামে রেসকোর্স ময়দানে। লাখো মানুষের পদভারে ঢাকা পরিণত হয় উদ্বেলিত এক নগরে। অলিগলি হতে সকাল থেকে দলে দলে মানুষ রাজপথ কাঁপিয়ে রেসকোর্স ময়দানের দিকে আসতে লাগল। ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা- তোমার আমার ঠিকানা’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ- বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো- বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ প্রভৃতি স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে আসতে লাগল শোষিত বঞ্চিত জনতা। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রেসকোর্স ময়দান।

বঙ্গবন্ধু জনসভায় আসতে একটু বিলম্ব করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হবে-কি- হবে না এ নিয়ে তখনো রুদ্ধদ্বার বৈঠক এবং বিতর্ক চলছে নেতৃবৃন্দের মধ্যে। পরে বঙ্গবন্ধু ২২ মিনিট তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম এবং ঐতিহাসিক ভাষণ শুরু করেন এভাবে-‘আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সকলে জানেন এবং বোঝেন, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ অধিকার চায়।… আমি বলেছিলাম, জেনারেল ইয়াহিয়া খান সাহেব, আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, দেখে যান কীভাবে আমার গরিবের উপর, আমার বাংলার মানুষের বুকের উপর গুলি করা হয়েছে। কীভাবে আমার মায়ের বুক খালি করা হয়েছে। কি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। আপনি আসুন, আপনি দেখুন।… ২৫ তারিখ এসেমব্লি ডেকেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। রক্তে পা দিয়ে শহীদের উপর পাড়া দিয়ে এসেমব্লি খোলা চলবে না। সামরিক আইন মার্শাল ল উইথড্র করতে হবে…। ’

এরপর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের আগের কয়েক দিনের ঘটনাবলি, শাসক শ্রেণীর সাথে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়া এবং মুক্তির আকাক্সক্ষায় বাংলাদেশীদের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ভাষণে তিনি বলেন, ‘এরপর যদি একটি গুলি চলে, এরপর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়- তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।… আমি যদি তোমাদের হুকুম দিবার না-ও পারি তোমরা সব বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব। সৈন্যরা, তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো তোমাদের কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু আর তোমরা গুলি করার চেষ্টা করো না। সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।… আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ! এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এ দিন বঙ্গবন্ধুই ছিলেন একমাত্র বক্তা। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পূর্বে আ স ম আব্দুর রব, নুরে আলম সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ নেতৃবৃন্দ মঞ্চ থেকে মাইকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে উপস্থিত জনতাকে উজ্জীবিত রাখেন।

দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য বিধি মেনে জাতীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com