মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় আজ মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করবেন। একই আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এদিন ঠিক করেন। এ রায় এমন এক সময় আসছে, যার মাত্র কয়েকদিন আগেই অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যার দায়ে ৮ জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মপক্ষ শুনানিতে আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণে আসা অভিযোগ পড়ে শোনালে কারাগারে থাকা চার আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে। তারও আগে রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার অভিযোগ প্রমাণের জন্য চার্জশিটের ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে অভিজিতের বাবা অধ্যাপক ড. অজয় রায়সহ ২৮ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন।
কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে শামস ওরফে সাজ্জাদ, মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও মো. আবু সিদ্দিক ওরফে সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে সাহাব। পলাতক আসামিরা হলেন, মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আবদুল্লাহ।
মামলায় ২০১৯ সালের ১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পুলিশ ইন্সপেক্টর মুহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের বিভিন্ন ধারায় এ চার্জশিট দাখিল করা হয়, যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-।
চার্জশিটে বলা হয়, ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে অপপ্রচার ও মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করায় জঙ্গি গ্রুপ আনসার আল ইসলামের নেতা মেজর জিয়ার নির্দেশ ও পরিকল্পনা এবং শারীরিক প্রশিক্ষক সেলিমের উপস্থিতিতে সংগঠনটির সদস্যরা অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার দুদিন আগে থেকে জঙ্গি সায়মন, সোহেল, আকরাম ও হাসান অভিজিৎ রায়ের গতিবিধি অনুসরণ করে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে আরাফাত, খলিল ওরফে আলী, অন্তু ও অনিক হত্যাকা-ে অংশ নেয়। হত্যাকা-ের সময় মেজর জিয়া, শরীরচর্চা প্রশিক্ষক সেলিম ঘটনাস্থল ঘিরে রাখেন যাতে তাদের সহযোগীদের কেউ আটক করতে না পারে। হত্যাকা-ের পর তারা ঘটনাস্থলে ব্যবহৃত চাপাতি ফেলে পালিয়ে যান।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা এবং তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ ওরফে বন্যাকে গুরুতর আহত করা হয়। তারা উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। অভিজিৎ যুক্তরাষ্ট্রে সফটওয়্যার প্রকৌশলী ছিলেন এবং বন্যা চিকিৎসক। ঘটনার পরদিন অভিজিতের বাবা অজয় রায় শাহবাগ থানায় এ হত্যা মামলা করেন।
Leave a Reply