ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাস চীন থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের অনেক দেশে। উহানেই এই ভাইরাসের জন্ম। সেখানে ভ্রমণ করতে এসেই অনেকে শরীরে ভাইরাস বয়ে নিয়ে গেছে নিজ দেশে। এরপর তা ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হলেও তা পাত্তা দেয়নি কেউ কেউ। সময় কাটাতে সাগর ভ্রমণে বেড়িয়েছে। প্রমোদ তরীর জৌলুস জীবনে ভুলে গেছে ভয়ঙ্কর ভাইরাসটির ছোবলের কথা। অজান্তেই শরীরে ঘাপটি মেরে থাকা করোনা ভাইরাসে তখন আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এ পর্যন্ত জাপান ও হংকংয়ের দুটি জাহাজ সনাক্ত করা হয়েছে। যেখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত আরোহীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
টোকিওর ইকোহামায় এখন ভেড়ানো হয়েছে ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামের প্রমোদ তরীটি। দুই হাজার ছয় শ’ ৬৬ জন আরোহী নিয়ে এটি যাত্রা করেছিলো। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রেরই ছিলেন ৪২৮ জন। তরীটিতে ক্র ছিলো এক হাজার ৪৫ জন।
দ্বিতীয় প্রমোদ তরীটির নাম ওয়াল্ড ড্রিম। হংকংয়ের কাই তাক ক্রুজ টার্মিনালে সেটি ভিড়ে আছে তিন হাজার ছয় শ’ যাত্রী ও ক্র নিয়ে। দেশটির স্বাস্ত্য মন্ত্রালয় বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
অপরদিকে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২০ জন আরোহীর শরীরে করোনা ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত সংখ্যা ছিল ১০ জন। কেবল ২৩৭ জনকে পরীক্ষা করে ৩১ জনকে সন্দেহজনকের তালিকায় রাখার পর ১০ জনকে সনাক্ত করা হয়। আজ সকালে নতুন আরো ১০ জনকে সনাক্ত করার কথা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ক্রুজের অপারেটর জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ১৯ জন আরোহী একজন ক্রু। এদের মধ্যে তিনজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। দু’জন অস্ট্রেলিয়ার, সাতজন জাপানের, একজন তাইওয়ানের, দু’জন কানাডার, একজন নিউজিল্যান্ডের এবং তিনজন হংকংয়ের। আক্রান্ত ক্রু’টি ফিলিপাইনের।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাকি আরোহীদের কমপক্ষে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, চিকিৎসকদের একটি দল রুমে রুমে গিয়ে প্রত্যেক আরোহীর পরীক্ষা করছেন।
হংকংয়ের ওয়াল্ড ড্রিম ক্রুজটি এক বিবৃতিতে জানায়, একজন আরোহী ১৯ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রমোদ তরীটিতে ছিলেন। তিনি ভিয়েতনামে যাওয়ার পর পরীক্ষা করানো হলে তার শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়।
বুধবার হংকংয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, চার হাজারেরও বেশি যাত্রী প্রমোদ তরীটি ছিলেন। ২৪ জানুয়ারি ভিয়েতনামের আগে দুটি জায়গায় তারা নোঙর ফেলেছিলেন। সেটি হলো চীনের নানশা আর হংকং।
ড্রিম কুজ থেকে বলা হয়েছে, ১৯ থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে যারা প্রমোদ তরীটিতে ছিলেন, ‘তাদের সাথে যোগাযোগ করে, মেডিক্যাল চেক-আপ করার অনুরোধ করবেন বলে জানিয়েছে’ তারা।
দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন প্রমোদ তরীটিতে এক হাজার আট শ’ জনের মতো যাত্রী এবং এক হাজার আট শ’ জন ক্রু আছেন। তাদরে মধ্যে ৩০ জন বুধবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের অবস্থা গুরুতর নয়। এদের মধ্যে তিনজনকে হংকংয়ের একটি হাসপাতালে দ্বিতীয়বারের মতো পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে।
সূত্র : সিএনএন ও এজিওস
Leave a Reply