1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

সিলেটে একটি মডেল সড়কের জন্য অপেক্ষা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২১

একটি মডেল সড়কের অপেক্ষায় সিলেটের মানুষ। সড়কটি হচ্ছে কোর্ট পয়েন্ট থেকে  চৌহাট্রা। সিলেট শহরের প্রাণ বলা হয় এই সড়ককে। ইতিমধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কাজ অনেক দূর এগিয়ে রাখা হয়েছে। বাকি কেবল ফিনিশিং। এই কাজ শেষ হলে চিত্র কী দাঁড়ায় সেই অপেক্ষায় সিলেটের মানুষ। এতদিন সিলেটের মানুষের দুঃখ ছিল এই সড়কটি। যানজট, হকার, রাস্তায় থাকা বিদ্যুতের খুঁটি, তারের জঞ্জালের কারণে ভোগান্তির সড়কে পরিণত করেছিলো এটিকে।

এই সড়কটি এখন বদলে ফেলা হচ্ছে। দু’পাশে নেই বিদ্যুতের খুঁটি। ভূ-গর্ভে নেয়া হয়েছে তারের জঞ্জাল। নির্মাণ করা হয়েছে ফুটপাথ। মাঝখানে আছে ‘আইল্যান্ড’। তাতে বসানো হচ্ছে ফুলের
গাছ। ঝলমল করবে সড়কটি। ইতিমধ্যে সড়কটির আংশিক রূপ ভেসে উঠেছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার সামনের সড়কের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। যারাই  দেখছেন সড়কটিকে স্মৃতি হিসেবে সেলফিতে বন্দি রাখছেন। কোর্ট পয়েন্ট থেকে চৌহাট্রা সড়কটি ছিল এক লেনের। আম্বরখানা থেকে কেউ গাড়ি নিয়ে ওই সড়ক ধরে কোর্ট পয়েন্টে আসতে পারতেন না। এমনকি রিকশা চলাচলও ছিল বন্ধ। এখন সিলেটের সড়কটিকে দুই লেনের সড়ক হয়েছে। উভয় পাশে চলছে যানবাহন। জিন্দাবাজারে রয়েছে একমাত্র সিগন্যাল। এই সিগন্যালে রয়েছে ভোগান্তি। সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- এই সড়কটি হচ্ছে একটি মডেল সড়ক। স্থানীয় ব্যবসায়ী, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সড়কটিকে দুই লেনের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এর সুফল পেতে শুরু করেছেন সিলেটের মানুষ। কিন্তু সড়কটিকে ভোগান্তি কমাতে এবং সৌন্দর্য বাড়াতে হলে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে। সড়কে যাতে কোনো রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি চলতে না পারে সে কারণে গত ডিসেম্বরেই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিলো। সেই সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেয়া হয়েছিল সবাইকে। বছরের প্রথম দিন ১লা জানুয়ারি থেকে সড়কে রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুই প্রবেশমুখে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়। এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ  থেকে রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সেটি কার্যকর করতে বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে বছরের প্রথম দিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রিকশা চলেছে আগের মতোই। এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। রিকশা কেন চলছে- এমন প্রশ্ন তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়। ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রিকশা চলবে কিনা- সে ব্যাপারে মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। ফলে রিকশা চলাচল বন্ধ করতে তারা বাস্তব উদ্যোগ নিতে পারেন না। এই অবস্থায় গতকাল সকাল থেকে এই সড়কে শুরু হয় রিকশা চলাচল। এদিকে সকালে হঠাৎ করেই সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা ওই সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করতে অভিযান শুরু করেন। তারা চৌহাট্রা এলাকায় অবস্থান নিয়ে চলাচলকারী রিকশা ফিরিয়ে দেন। এ সময় মেয়র আরিফ ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতা চাননি। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশও সহযোগিতায় এগিয়ে যায়নি। তবে মেয়র যতক্ষণ ওই এলাকায় ছিলেন ততক্ষণ রিকশা চলাচল আটকে দেয়া সম্ভব হয়েছে। তিনি ফিরে আসার পরপরই পরিস্থিতি আগের মতোই হয়ে যায়। সিলেট সিটি করপোরেশনের  মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, রাস্তায় ভোগান্তি কমাতে এই সড়কে রিকশা, ভ্যানগাড়ি ও ঠেলাগাড়ি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি অবশ্যই পালন করা হবে। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান। সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশনকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। সিসিক চাইলে যেকোনো সময় ট্রাফিক পুলিশ সহযোগিতা করবে। এদিকে রিকশা চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে আন্দোলনে মাঠে রয়েছে সিলেটের রিকশা মালিক ও শ্রমিক ঐক্যপরিষদের নেতারা। রিকশা শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট নগরীর চৌহাট্টা থেকে কোর্ট পয়েন্ট পর্যন্ত রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে রিকশা শ্রমিকরা কাজিরবাজার ব্রিজে দীর্ঘ লাইনে রিকশা দাঁড় করিয়ে ব্যতিক্রমী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। সিলেট জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইয়াছিন খান জানিয়েছেন, ‘যারা অযথা রিকশার উপর দোষ চাপিয়ে যানজট সৃষ্টির কথা বলেন- সেটা তাদের ভুল ধারণা। রিকশার জন্য নগরীতে যানজট সৃষ্টি হয় না। সড়কের উভয় পাশে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়। সেদিকে কর্তৃপক্ষ নজরদারি করলে নগরী যানজট মুক্ত থাকবে। জিন্দাবাজার এলাকার রাস্তা উন্নয়ন হয়েছে- এটার পক্ষে আমরাও। কিন্তু সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৈষম্যতা সৃষ্টি করে রিকশা শ্রমিকদের পেটে লাথি মারা এটা আমরা কখনো মেনে নিতে পারি না।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com