দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলজুড়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। কুড়িগ্রামের রাজারহাটে গতকাল শনিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই চলতি মৌসুমে এবং দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আরও কয়েকদিন এমন শৈত্যপ্রবাহ চলবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এর পর থেকে আবার তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে।
আবহাওয়া বিভাগ বলছে, দেশের কয়েকটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে গত শুক্রবার থেকেই চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। এর মধ্যে কয়েক অঞ্চলে তাপমাত্রা নেমেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। ঠা-ার সঙ্গে রয়েছে কনকনে হাওয়া। কুয়াশায় ঢেকে থাকা প্রকৃতিতে কয়েক মিটার দূরের দৃশ্যও দেখা যায় না। তবে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা অনেক কমলেও গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৮ থেকে ৬-এর মধ্যে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৬-এর নিচে থাকলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চলমান শৈত্যপ্রবাহ আপাতত তেমন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে এ মাসেই আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, দেশের কয়েকটি অঞ্চল বিশেষ করে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের ওপর দিয়ে চলতি শীত মৌসুমের প্রথম মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া কুষ্টিয়া, যশোর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর ও শ্রীমঙ্গলের ওপর দিয়েও বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। আগামী চার থেকে পাঁচ দিন এ অবস্থা স্থায়ী হতে পারে।
কুড়িগ্রামের আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক মোল্লা হারুন উর রশীদ জানান, কুড়িগ্রামে দুদিন ধরে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। রাজারহাটে অবস্থিত আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা কমেছে ৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার এ রকম আপডাউন চলছে। জেলার তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
এদিকে কনকনে শীতের হিমেল ঠা-ায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। প্রায় জবুথবু অবস্থা এ অঞ্চলের মানুষের। শ্রমজীবীদের অনেকেই কাজে যেতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে রয়েছেন সমস্যায়। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে চরের হতদরিদ্র মানুষের কষ্ট হচ্ছে বেশি। সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছে শিশু, নারী, প্রতিবন্ধী ও বয়স্করা। শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত রোগের সংখ্যাও। প্রতিদিন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া, কাশি, সর্দি, জ্বর ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগ-ব্যাধিতে।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম জানান, দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ক্রমন্বয়ে তাপমাত্রা নিচে নামতে শুরু করেছে। টানা পাঁচ দিন ধরে ১০ থেকে ৭ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। গতকাল সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। প্রচ- কুয়াশায় শীতকালীন সবজি, আলু ক্ষেত ও বীজতলায় বোরো বীজ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক জিতেন্দ্র নাথ জানান, শনিবার সকাল ৯টায় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত শুক্রবার রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা। দিন দিনই তাপমাত্রা কমে আসছে।
Leave a Reply