সঠিকভাবে পৈতৃক সম্পত্তি বণ্টন না করায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক বৃদ্ধের লাশ দাফনে বাধা দিয়েছেন তার সন্তানরা। বিবদমান বিষয়টি নিয়ে কোনো সমাধান না হওয়ায় নুরুল হক ভূঁইয়ার নিথর দেহ দুদিন ধরে পড়ে আছে কবরুয়া গ্রামের নিজ ঘরে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্যা নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশ দাফন করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হক ভূঁইয়া গত সোমবার সকাল ৯টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলে দ্বন্দ্বে জড়ায় তার দুই পরিবারের সন্তানরা। সম্পত্তি নিয়ে পূর্ববিরোধের সমাধান না করে বাবার লাশ দাফন করতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হক ভূঁইয়ার প্রথম স্ত্রী আয়েশা আক্তারের
পক্ষে রয়েছে ছয় মেয়ে। চট্টগ্রাম স্টিল মিলে চাকরির সুবাধে সুরমা আক্তার নামে সন্দ্বীপের আরেক নারীকে বিয়ে করেন। সেই সংসারে নুরুল হকের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। তিনি নতুন বাড়ি করে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেই বসবাস করতেন। তাই ওই সংসারের সন্তানরা আগেই ১৪০ শতক জমি তাদের নামে করে নেন। এ বিষয়ে শুরু হয় নতুন বিরোধ। পরে নুরুল হকের প্রথম স্ত্রী বাদী হয়ে সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা দাবি করে চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন।
সমস্যা সমাধান না করেই নুরুল হক ভূঁইয়া সোমবার সকালে মৃত্যুবরণ করলে বাবার সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে লাশ দাফনে বাধা দেন প্রথম স্ত্রীর ছয় সন্তান। এ সময় প্রবাস থেকে বৃদ্ধের ছেলে নুরুল আফছার মোবাইলে গ্রামবাসীকে বলেন, ‘বাবার লাশ দাফনের দরকার নেই। আমরা কাউকে এক কড়া সম্পত্তিও দেব না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহমেদ বলেন, ‘নিহত নুরুল হক ভূঁইয়ার দুই পরিবারের শান্তির জন্য এবং তার লাশ দাফনের ব্যবস্থায় গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ ঘটনাস্থলে থাকা চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই কামাল হোসেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘দুই পরিবার ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান করা হচ্ছে। শিগগিরই মৃতের লাশ দাফন করা হবে।’
Leave a Reply