1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ অপরাহ্ন

এজেন্ট ব্যাংক আমানতের ১০ শতাংশ পাচ্ছেন ঋণগ্রহীতা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০

এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে যে পরিমাণ আমানত গ্রহণ করা হচ্ছে তার মাত্র ১০ ভাগ বিতরণ করা হচ্ছে। কোনো কোনো ব্যাংক এক টাকাও বিতরণ করছে না। এ নিয়ে এজেন্টদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত আমানত সংগ্রহ করা হয়েছে ছয় হাজার ৫২১ কোটি টাকা। বিপরীতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ৬৬১ কোটি টাকা, যা শতকরা হিসাবে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অথচ এ আমানতের বেশির ভাগ অর্থাৎ ছয় হাজার ১০৮ কোটি টাকাই এসেছে গ্রাম থেকে। আবার চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহ করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ২০২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যে পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করছে, বেশির ভাগ ব্যাংকই তা থেকে কোনো ঋণই বিতরণ করছে না। অথচ বেশির ভাগ আমানতই সংগ্রহ করা হচ্ছে গ্রাম থেকে।

গত আগস্টে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমানত বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরের আগস্টে ছিল পাঁচ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমানত প্রবাহ বেড়েছে ছয় হাজার ৫২১ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে ১১৯ ভাগ। শুধু আমানত প্রবাহই বাড়ছে না, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহও বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামে থাকা আত্মীয়স্বজনের কাছে বেশি হারে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত আগস্ট শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৫৬১ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা; যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬৪১ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ২৯৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় তিন গুণ। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামে রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ২৩৯ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা। আর শহরে এসেছে ৩২২ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা।

একজন এজেন্ট জানান, বেশির ভাগ আমানত গ্রাম থেকে এলেও গ্রামের এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে না। ফলে এজেন্টরা যাদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করছেন তাদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে না পারায় অনেকেই এজেন্ট ব্যাংক থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছেন। অনেক গ্রাহক মূল ব্যাংকের কাছে আমানত রাখছেন। গ্রামের গ্রাহক বঞ্চিত হওয়ায় এজেন্ট ব্যাংক গঠনের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত বছরের আগস্ট থেকে গত আগস্ট পর্যন্ত ছয় হাজার ৫২১ কোটি টাকা আমানতের মধ্যে ছয় হাজার ১০৮ কোটি টাকাই এসেছে গ্রামের গ্রাহকের কাছ থেকে। অথচ ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে তেমন কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না ব্যাংকগুলো।

ব্যাংকভিত্তিক পরিসংখ্যান মতে, গত এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ২৩টি ব্যাংকের মধ্যে ১৪টি এক টাকাও ঋণ বিতরণ করেনি। আবার যারা বিতরণ করছে তারাও যৎসামান্য। যেমনÑ একটি বড় ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে জুন পর্যন্ত আমানত ছিল প্রায় তিন হাজার ৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু ঋণ বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ১১২ কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা জানান, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তারা স্বল্প ব্যয়ে মুনাফা বেশি পাচ্ছেন। যেমন- কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত পরিপালন করে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স দেয়া হয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে। মূল ব্যাংকের শাখার মতো এজেন্ট ব্যাংকের শাখায়ও লেনদেন হয়। কিন্তু এজেন্ট ব্যাংকের শাখার সম্পূর্ণ দায়ভার থাকে এজেন্টের। লোকবলের বেতনভাতা, শাখার ভাড়া, ইউটিলিটি বিল সব কিছুই পরিশোধ করেন এজেন্টরা। সাধারণের কাছ থেকে যে পরিমাণ আমানত গ্রহণ এবং রেমিট্যান্স আহরণ করা হয়, তার বিপরীতে ব্যাংকের নির্ধারিত হারে কমিশন পেয়ে থাকেন এজেন্টরা। একই সাথে গ্রাহক বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আদায় করে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ না করায় এজেন্ট ব্যাংক গঠনের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে। কারণ এজেন্ট ব্যাংক গঠন করা হয়েছিল যেখানে ব্যাংক শাখা স্থাপন করতে পারবে না ওই সব প্রান্তিক এলাকায় এজেন্ট ব্যাংক স্থাপন করে অবহেলিত মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসা। তাদের কাছ থেকে আমানত নিয়ে আবার তা বিতরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে তাদেরকে স্বাবলম্বী করা। কিন্তু এখানে প্রান্তিক জনগণের কাছ থেকে শুধু আমানত গ্রহণ করে তা বিতরণ না করা হলে কাক্সিক্ষত হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com