বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
গত ৪ অক্টোবর মিন্নিসহ ৬ আসামির ডেথ রেফারেন্স নথি হাইকোর্টে পৌঁছায়। নিয়ম অনুযায়ী, রায়ের কপি হাইকোর্টে আসার পর আসামিরা সাত দিনের মধ্যে আপিল আবেদন করতে পারবেন। সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনের মধ্যেই আপিল আবেদন করেন আইনজীবীরা।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যার মামলায় মিন্নিসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। রায়ে অপর চার আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনার পর রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় মিন্নিকে। মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ওই বছরের ২ জুলাই পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এরপর মামলার তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ি থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনসে ডেকে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
নিম্ন আদালতে কয়েক দফা জামিন আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করেন মিন্নি। এরপর ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মিন্নিকে জামিন দেন। গত বুধবার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত মিন্নি জামিনে ছিলেন।
আলোচিত এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার তৎকালীন পরিদর্শক মো: হুমায়ুন কবির ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন। তার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে মিন্নিকে ৭ নম্বর আসামি করা হয়।
সেই ১০ আসামির বিচার শুরু হয় বরগুনা জেলা ও দায়রা আদালতে। সর্বশেষ গত বুধবার বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আছাদুজ্জামান রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অন্য চার আসামিকে খালাস দেয়া হয়। একই ঘটনায় পুলিশের দেয়া আরেকটি চার্জশিট অনুযায়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিচার চলছে শিশু আদালতে।
Leave a Reply