বরিশালের বাকেরগঞ্জে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেক মোল্লাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন হত্যা, ধর্ষণ, গুম, অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ ২২ মামলার আসামি এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম মামুন ওরফে হাতকাটা মামুন। স্থানীয় জনতা তার চোখ উপড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ইছাপুরা হাইস্কুল সংলগ্ন খান বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাতকাটা মামুন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেক মোল্লাকে উদ্ধার করে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠায়।
শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাতকাটা মামুনকে উন্নত চিকিৎসকার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছেন। বারেক মোল্লা শেবাচিমে ভর্তি আছেন।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ। এলাকা শান্ত আছে।’
স্থানীয় কাকরধা পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরিদউদ্দিন জানান, ফরিদপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জহিরুল ইসলাম মামুন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্তত ২২টি মামলা আছে। এলাকার একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিরোধ ছিল।’
এসআই ফরিদ বলেন, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেক মোল্লাকে তার বাড়িতে গিয়ে কোপায় মামুন ও তার লোকজন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে ধাওয়া করে মামুনকে ধরে গণধোলাই দেয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা তার দুটি চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুন ও বারেক মোল্লাকে উদ্ধার করে।
ঢাকায় আসার আগে শেবাচিমে ভর্তি হাতাকাট মামুন বলেন, ‘আমি কারও ওপর হামলা করি নাই। মোল্লার ওপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে আমার প্রতিপক্ষরা হামলা চালিয়ে আমার চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা করে।’
আহত বারেক মোল্লা বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ হাতকাটা মামুন ও তার ১৫/১৬জন সহযোগী আমার ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আমার শরীরে ৭/৮টি কোপ লাগে। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আমি মেম্বার পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় হাতকাটা মামুন আমার এবং আমার লোকজনের ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে।’
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ‘বারেক মোল্লা এবং মামুনের পক্ষের লোকজনের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply