সিলেটের বিশ্বনাথের বহুল আলোচিত চাউলধনী হাওরপাড়ে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের এপিপি কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া আরও ১৭ জন আসামিকে ২ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় মোট ৩২ আসামির মধ্যে ১ জন পলাতক থাকলেও বাকি সকলেই কারাবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বহুল আলোচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম, নজরুল, সদরুল, সিরাজ, জামাল, শাহিন, জলিল ও আনোয়ার।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ইলিয়াছ, আব্দুন নুর, জয়নাল, আশিক, আছকির, ফরিদ ও আকবর।
ছবি: মামলার প্রধান আসামি সাইফুল আলম।
উল্লেখ্য, গত ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথের চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিনের ক্ষেতের জমি থেকে জোরপূর্বক পার্শ্ববর্তী সড়কে মাটি তুলতে যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম। এ সময় তাকে বাধা দেন একই গ্রামের নজির উদ্দিন, তার চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা ১০ম শ্রেণির ছাত্র সুমেল মিয়া। শুরু হয় বাগবিতন্ডা। এক পর্যায়ে গুলি চালান সাইফুল। তার গুলিতে সুমেল নিহত হন। সেই সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হন সুমেলের পিতা ও চাচাসহ আরও ৪ জন।
ঘটনার পর সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে ২৭ জনের নামে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা (নাম্বার ৪, তারিখ ০৩/০৫/২১ইং) দায়ের করেন। বিশ্বনাথ থানার তৎকালিন পরিদর্শক (তদন্ত) রমাপ্রসাদ চক্রবর্তী দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ২৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। ওইদিন আদালত ৩০ আসামিকে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলার ৩২ আসামির মধ্যে এজাহার নামীয় আসামি মামুনুর রশীদ এখনো পলাতক রয়েছেন। মামলার প্রধান আসামি সাইফুল আলম প্রায় পৌনে ৪ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাদী ইব্রাহিম আলী সিজিল। তিনি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানিয়ে বলেন, ‘এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।’
Leave a Reply