কোন সমাধিস্থলের রেকর্ড নেই। কোন সমাধিফলক নেই। কোন স্মৃতিস্তম্ভ নেই। ২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত কিছুই ছিল না।
সম্প্রতি জানা যায়, এখানে প্রায় ৮০০ আইরিশ শিশুকে গণকবর দেওয়া হয়েছে। সবার অগোচরে এতো শিশুকে কবর দেওয়ার কারণ কী?
সিএনএন জানিয়েছে, বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় ধরে টুয়ামের এই প্রতিষ্ঠানটিতে এমন নারীদের পাঠানো হতো যারা বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। তাদেরকে গোপনে সন্তান জন্মদানের জন্য এখানে পাঠানো হত।
সন্তান জন্মের পর মহিলাদের প্রায়শই জোর করে তাদের সন্তানদের থেকে আলাদা করা হত। কিছু শিশুকে আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দূরবর্তী স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হতো দত্তক নিতে ইচ্ছুক পরিবারের কাছে।
কিন্তু মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে শত শত শিশু মারা যেত এবং তাদের দেহাবশেষ মাটিচাপা দেওয়া হত। তাদের মায়েরা প্রায়শই জানতেন না যে তাদের শিশুদের আসলে কী হয়েছিল।
সোমবার আইরিশ এবং আন্তর্জাতিক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল টুয়ামের গণকবরটি খনন শুরু করবে। এখানে ৭৯৬ শিশুর দেহাবশেষ থাকাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুই বছর ধরে এই খননকাজ চলবে।
১৯২২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ক্যাথলিক চার্চ এবং আয়ারল্যান্ড সরকার অবিবাহিত মহিলাদের শাস্তি দিতে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিল। এসব প্রতিষ্ঠানের চারপাশ উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা থাকতো। এসব ভবনে মা ও শিশুদের একে অপরের থেকে আলাদা করা হত।
অনেক নারীকে সন্তান জন্মদানের পর ক্যাথলিক-পরিচালিত ম্যাগডালিন লন্ড্রিতে পাঠানো হত। সেখানে তাদের অবৈতনিক কর্মী হিসেবে আটক রাখা হত। মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন অনেক শিশুই শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকেনি। টুয়াম হোমসহ এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে কমপক্ষে ৯ হাজার শিশু মারা গিয়েছিল।
Leave a Reply